Monday, May 20, 2024
HomeUncategorizedপ্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি

প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি

বর্তমানকালে প্রচলিত যে আধুনিক ও পর্যবেক্ষণ নির্ভর চিকিৎসা তা শুরু হয়েছিল প্রাচীন মিশরে। প্রাচীন মিশর থেকে আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যা গ্রীকে পৌঁছায়। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে আজ সবখানে। পশ্চিমা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস চিকিৎসাবিজ্ঞান সমন্বিত জ্ঞান সর্বপ্রথম সুবিন্যাস্ত করেন।

তবে হিপোক্রেটিসের সময় থেকে হাজার বছর পূর্বেও মেসোপটেমিয়ার চিকিৎসকদের রোগের বিশ্লেষণ থেকে ঔষধ তৈরি ও প্রয়োগের ইতিহাস পাওয়া যায়। এই মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ইরাকের একটি অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল।

প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় নারী-পুরুষ উভয়েই চিকিৎসা করতে পারতেন। তবে চিকিৎসকদের বাধ্যতামূলকভাবে মাথা ন্যাড়া করে থাকতে হতো, যাতে তাদের দেখলেই চেনা যায়। চিকিৎসকেরা একটি চামড়ার ব্যাগে ঔষধ নিয়ে গ্রাম পর্যবেক্ষণ করতেন। তারা শপথ বাক্য হিসাবে যে মন্ত্র পাঠ করতেনঃ

আয়ুর্বেদ চিকিৎসার মূলতত্ত্ব
Ayurveda
সেটি হলঃ
“আমি চিকিৎসক, আমি রােগ নিরাময় করি।
আমি ঔষধি গাছ দিয়ে রােগ তাড়াই।
আমার চামড়ার ব্যাগে আছে সুস্বাস্থ্যের উপকরণ।
আমার মুখে আছে পবিত্র বাক্য যার শক্তিতে আছে নিরাময়।
আমি মানুষকে করি সুস্থ।
আমার ড্রেসিং ব্যথা থেকে দেয় মুক্তি।
আমার নরম ব্যান্ডেজ রােগীকে দেয় আরাম।”

গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাস এর একটি লেখা থেকে জানা যায়- প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার কোন কোন অংশের চিকিৎসাব্যবস্থা এরূপ ছিল যে, রোগীদেরকে রাস্তায় এনে ফেলে রাখা হতো। তখন ওই পথ দিয়ে পথচারীরা চলার সময় নিজেদের অভিজ্ঞতা ও পরিচিতজনের অভিজ্ঞতার আলোকে রোগীদের রোগারোগ্যের পরামর্শ প্রদান করতেন। প্রত্যেক পথচারীকেই বাধ্যতামূলকভাবে এই কাজটি করতে হতো।

বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায় মেসোপটেমিয়ায় দুই প্রকারের চিকিৎসকেরা চিকিৎসা করতেন। যাদের একটি শ্রেণী কে বলা হতো- ‘আশু’।
এবং অপর শ্রেণী কে বলা হত- ‘আশিপু’।

যাদেরকে আশু বলা হতো, তারা অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ দ্বারা বিশ্লেষণপূর্বক রোগের চিকিৎসা করতেন। এবং আশিপু যাদের বলা হতো, তারা রোগারোগ্যে যাদুবিদ্যার ব্যবহার করতেন। অভিজ্ঞ আশু, আশিপু এবং পশু চিকিৎসকেরা প্রয়োজনে রোগীদেহে অস্ত্রোপচারও করতেন।

প্রাচীন মেসোপটেমিয়া রোগকে পাপের ফল হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধান বা নিয়মকানুনের ভঙ্গ করলে সেটিকেই পাপ বলে গণ্য করা হতো। মেসোপটেমিয় সভ্যতায় সেই সময়ে রোগীকে রোগারোগ্যের উদ্দেশ্যে দেবতাদের উদ্দেশ্যে তার পূর্বকৃত পাপের কথা স্বীকার করতে হতো। রোগীর প্রতি দেবতারা সন্তুষ্ট হলেই কেবল রোগীকে পাপের শাস্তি থেকে মাপ করা হতো বলে তখনকার লোকেরা বিশ্বাস করত। সম্পূর্ণ ব্যাপারটি হত দেবতাদের ইচ্ছানুযায়ী। অর্থাৎ রোগী ভুল স্বীকার করার পরেও দেবতারা সন্তুষ্ট না হলে রোগী সুস্থ নাও হতে পারতো।

মেসোপটেমীয় সভ্যতা চিকিৎসকরা রোগীর কাছ থেকে সম্মানী গ্রহণ করতেন। এই সম্মানীর পরিমাণ রোগীর সামাজিক ও আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতো। অভিজাত পরিবারের সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হতো, সেই তুলনায় সাধারন পরিবার থেকে খুবই সীমিত পরিমাণে অর্থ গ্রহণ করতেন চিকিৎসকেরা। যুবরাজের চিকিৎসায় যেখানে স্বর্ণ নেওয়া হতো সেখানে সাধারণ দরিদ্র পরিবার থেকে হয়তো সামান্য কোন খাদ্যদ্রব্য বা একটি মাটির কাপ এরুপ সাধারণ কিছু নেওয়া হতো।

চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র পুরোপুরি অনুসরণ করার পরও যদি কোনো রোগী সুস্থ না হত, তাহলেও রোগীর দায়দায়িত্ব চিকিৎসকের ওপর বর্তাত না। এমনকি রোগী মারা গেলেও‌ চিকিৎসক তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন বলে ধরা হতো। কেননা রোগারোগ্য সম্পূর্ণ দেবতাদের ইচ্ছাধীন বলে বিবেচনা করা হতো।

তবে সার্জারি বা অপারেশনের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ছিল। সার্জারি বা অপারেশন করার ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসক ভুল করলে সেই চিকিৎসককে শাস্তি পেতে হতো।

প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় কিছু গাছ-গাছালি বা লতাপাতা ব্যাবহার করে মেয়েদের প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হতো। মেয়েদের আন্ডারওয়্যারের ভিতরে এগুলো রেখে দেওয়া হতো। এবং যদি এগুলোর রং পরিবর্তন হয়ে যেত তাহলে মেয়েটি গর্ভবতী বোঝা যেত।

(একটি চিকিৎসা প্রবন্ধ পাঠ করে তার ভাববস্তু নিয়ে লেখা।)
ডাঃ দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
০৩/০১/২০২২
————————
Dr. Dipankar Mondal
Dr. Dipankar Mondal
আমি ডা. দীপংকর মন্ডল। রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ। যেকোন নতুন ও পুরাতন রোগের চিকিৎসা করার জন্য যোগাযোগ করুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments