Sunday, May 19, 2024
Homeপ্রাকটিস অব মেডিসিনব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ? ব্রেন স্ট্রোক হলে কি করনীয়?

ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ? ব্রেন স্ট্রোক হলে কি করনীয়?

প্রাথমিক কথাঃ আজকের আলোচনাতে আমরা ব্রেন স্ট্রোক কি? স্ট্রোক কত প্রকার? স্ট্রোকের কারণ? স্ট্রোকের লক্ষণ? মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ? স্ট্রোক হলে করণীয়? স্ট্রোকের চিকিৎসা? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। এছাড়াও স্টক বিষয়ক আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

ব্রেন স্ট্রোক কি?

ব্রেন স্ট্রোক রোগটি সেরিব্রোভাসকুলার অ্যাক্সিডেন্ট (CVA) নামেও পরিচিত। মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ ব্যাহত হলে মস্তিষ্কের কোষ গুলির ক্ষতি বা মৃত্যু হয়। এই অবস্থাকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোক নানাবিধ স্নায়বিক উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে এবং স্ট্রোকের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

ব্রেন স্ট্রোক কত প্রকার?

প্রধানত দুইটি প্রকারের স্ট্রোক হয়ে থাকে।

১)  ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং
২) হেমারেজিক স্ট্রোক

ইস্কেমিক স্ট্রোকঃ মস্তিষ্কের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যে স্ট্রোক হয় তাকে ইস্কেমিক স্টোক বলে।

হেমারেজিক স্ট্রোকঃ রক্তনালী ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কের ভেতর যে রক্তক্ষরণ হয় তাকে হেমারেজিক স্ট্রোক বলে। ভিন্ন ভিন্ন কারণ থেকে স্ট্রোক ঘটে থাকে। তবে প্রত্যেকটা স্ট্রোকই একটাই কাজ করে থাকে তা হল মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। যার ফলে মস্তিষ্কের কোষের সম্ভাব্য ক্ষতি হয়।

ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়?

উচ্চ রক্তচাপকে ব্রেন স্ট্রোকের জন্য প্রাথমিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কারণ এর মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের আধিক্য, স্থূলতা, ধূমপান, শেষ পর্যায়ের রেনাল ডিজিজ, অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন এই সকল কারণ সম্মিলিতভাবে ভাস্কুলার ডিজিজ, রক্ত জমাট বাধা এবং কার্ডিয়াক অবস্থাকে প্রভাবিত করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

স্ট্রোকের কারণগুলিকে দুটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে।

ইস্কেমিক স্ট্রোকের কারণঃ

থ্রোম্বোটিক স্ট্রোকঃ ইস্কেমিক স্ট্রোকের কারণ মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী ধমনী গুলোর কোন একটিতে রক্ত জমাট বাধার কারণে ঘটে থাকে।

এম্বোলিক স্ট্রোকঃ এটি সাধারণত শরীরের অন্য অংশ থেকে উদ্ভূত হয় যেমন হৃদপিণ্ডে বা বড় ধমনী ইত্যাদি থেকে। রক্তের ক্লট, রক্ত প্রবাহের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে এবং রক্তনালীতে অবস্থান করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহে বাঁধা দেয়। ব্লকেজের অবস্থান এবং আকার এর উপর নির্ভর করে স্ট্রোকের তীব্রতার তারতম্য হয়।

হেমারেজিক স্ট্রোকের কারণঃ

ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমারেজ– মস্তিষ্কের ভেতর কোন একটি রক্তনালি ফেটে গেলে এটি ঘটে থাকে।

সুবারাচনয়েড হেমারেজ-মস্তিষ্ক এবং পার্শ্ববর্তী ঝিল্লির মধ্যবর্তী স্থানে রক্তপাতের কারণে ঘটে থাকে।

ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ? ব্রেন স্ট্রোক হলে কি করনীয়?
ব্রেন স্ট্রোকের ছবি

ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণঃ

ব্রেন স্ট্রোকের কের সাধারণ লক্ষণ গুলো হলঃ

১) মুখ, বাহু ও পায়ে বিশেষ করে শরীরের একপাশে হঠাৎ আশাড়তা বা দুর্বলতা দেখা দেয়।
২) হঠাৎ বিভ্রান্তি, কথা বলতে সমস্যা বা কথা বুঝতে অসুবিধা।
৩) হঠাৎ এক বা দুই দুই চোখে দেখতে অসুবিধা হতে পারে।
৪) কোন বিশেষ কারণ ছাড়া হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যাথা।
৫) মাথা ঘোরা, ভারসাম্য হারানো বা হাঁটতে অসুবিধা।

মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ হিসেবেও এসবের এক বা একাধিক অসুবিধা দেখা যাবে। সমস্যা অল্প আকারে হলে রোগ লক্ষণের তীব্রতা কম থাকবে। 

সংক্ষেপে স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ গুলি হল- হঠাৎ অসাড়তা, বিভ্রান্তি-কথা বলতে সমস্যা, দৃষ্টির ব্যাঘাত, তীব্র মাথাব্যথা, হাঁটতে অসুবিধা ইত্যাদি।

ব্রেন স্ট্রোক হলে কি করণীয়?

কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করতে হবে।

জরুরী পরিষেবা গুলোতে কল করুনঃ কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসা সহায়তা পেতে অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা সেন্টারে কল করতে হবে।

সময় নোট করুনঃ স্ট্রোকের লক্ষণ গুলি কখন থেকে শুরু হয়েছিল তা নোট করুন। চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এই তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

রোগীকে শান্ত রাখুনঃ চিকিৎসা সহায়তার জন্য অপেক্ষা করার সময় পর্যন্ত রোগীকে যথাসম্ভব শান্ত রাখুন।

শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সহায়তা করুনঃ যদি রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয় তবে নিশ্চিত করুন যে তার শ্বাসনালী পরিষ্কার আছে। প্রয়োজন হলে Cardiopulmonary Resuscitation(CPR) প্রদান করুন অপেক্ষার সময়টুকুতে।

উপযুক্ত পরিবহনঃ মনে রাখবেন এই পরিস্থিতিতে কখনোই নিজের ড্রাইভ করে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। অবশ্যই জরুরি চিকিৎসা পেশাদারদের সাহায্য নিন। রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে খুব ঝাকি না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

মনে রাখবেন সময় এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগীকে যত দ্রুত হাসপাতলে নেওয়া সম্ভব হবে ততই রোগীর রিকভারির সুযোগ বেড়ে যাবে।

ব্রেন স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসাঃ

স্ট্রোক টি ইস্কেমিক নাকি হেমারেজিক তার উপরে নির্ভর করে স্ট্রোকের চিকিৎসার ধরন। 

ইস্কেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসাঃ

১) ক্লট-বাস্টিং মেডিকেশন(tPA)– এটি একটি কলট ব্লাস্টিং ঔষধ যা প্রাথমিকভাবে ইস্কেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। সর্বোচ্চ সাড়ে ৪.৫ ঘন্টার মধ্যে এই ঔষধটি ব্যবহৃত হলে তা সর্বাধিক কার্যকর হয়।

২) Mechanical Thrombectomy– শারীরিকভাবে রক্তের ক্লটটি অপসারণের একটি পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়া ব্যবহারের পূর্বে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাধার উপস্থিতি এবং অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করার প্রয়োজন হয়।

হেমারেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসাঃ 

১) সার্জারি– স্ট্রোকের কারণ এর উপর নির্ভর করে রক্তনালী গুলি মেরামত বা অপসারণের জন্য অস্ত্রপচার লাগতে পারে।

২) রক্তপাত নিয়ন্ত্রণঃ রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের উপর চাপ কমাতে ঔষধ এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকাঃ

ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা খুব সচেতন ভাবে করতে হবে। একজন স্ট্রোকের রোগীর রোগের ব্যবস্থাপনা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে খাদ্য নির্বাচন অতীব প্রয়োজনীয়। ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি ব্রেন স্টোক রোগীর খাবার তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যে সকল শস্য গোটা খাওয়া যায় সেগুলোর খোসা না ছাড়িয়ে গেলে অধিক ফাইবার পাওয়া যাবে। এমন কোন খাবার রোগীর খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয় যাতে রোগীর আবারও স্ট্রোক এর ঝুকি বাড়ে। নীচে নীচে একটি আদর্শ মানের ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা উল্লেখ করা হল।

চর্বিহীন প্রোটিন(Lean proteins) যেমন মুরগির মাংস, হাঁসের মাংস, মাছ এসব খাদ্য পেশী পুনরুদ্ধার এবং শারীরিক শক্তির জন্য খুবই ভালো। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর চর্বি নির্বাচন করতে হবে।
নিচে স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎসের একটি তালিকা দেয়া হলোঃ

অ্যাভাকাডোঃ মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ যা হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর।
অলিভ অয়েলঃ মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
বাদামঃ (almonds-এলমন্ড, walnuts-ওয়ালনাটস) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ।
সিডসঃ (chia seeds-চিয়া সিডস, flaxseeds-ফ্লাক্স সিডস) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এর ভালো উৎস।
নারকেল তেলঃ কিছু স্বাস্থ্য সুবিধা যুক্ত তবে এতে সামান্য ট্রাইগ্লিসারাইড রয়েছে।
চর্বিযুক্ত মাছঃ (salmon-স্যামন, mackerel-ম্যাকেরেল) ওমেগা 3 পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে এবং হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ফ্ল্যাক্স সিড তেলঃ (Flaxseed Oil)ওমেগা থ্রি ফাটি এসিড এর একটি উদ্ভিদজ উৎস।
ডিমঃ (পরিমিত পরিমাণে) স্বাস্থ্যকর চর্বি পাওয়া যায় ডিমে। বিশেষ করে ডিমের কুসুমে এটি পাওয়া যাবে।

একজন স্টোকের রোগীর ডায়েটে স্বাস্থ্যকর এই চর্বিগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে রোগের সামগ্রিক স্বাস্থ্য অবদান রাখা যায়। ব্যক্তিগত পরামর্শের জন্য অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

ব্রেন স্ট্রোক এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ

অ্যাকোনাইটঃ একোনাইট এর লক্ষণ সাদৃশ্যে ব্যবহৃত হয়। আকস্মিক ও হঠাৎ ভয়াবহ রকমের আক্রমণ, অধিক পিপাসা, মৃত্যুভয় ইত্যাদি লক্ষণে ব্যবহার্য।
ব্যারাইটা কার্বঃ একাঙ্গীর পক্ষাঘাতে যেখানে রক্তস্রাব ঘটেছে সেখানে এই ওষুধটি লক্ষণ সাদৃশ্যে ব্যবহৃত হয়।
ক্যালি ব্রোমঃ হঠাৎ মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হয় রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়।
ওপিয়ামঃ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর শ্বাস-প্রশ্বাসের বাধা, রোগী শুয়ে পড়ে। রোগী কিছুটা অচেতন হয়ে পড়ে ও চক্ষু অর্ধেক খোলা থাকে।
পিটুইটারিনামঃ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকে বহুল ব্যবহৃত ঔষধ। রক্তের চাপ শোষণ করতে সহায়তা করে। উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণে স্ট্রোক।
জিঙ্কাম মেটঃ সেরিব্রাল স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ভাল কাজ করে;  ব্রেনের দীর্ঘস্থায়ী অক্ষমতা, মস্তিষ্কের পক্ষাঘাত।
হায়োসিয়ামসঃ অনিচ্ছাকৃত পায়খানা এবং প্রস্রাবের সাথে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ।
গ্লোনোইনঃ সূর্যালোকে অধিক্ষণ থাকার কারণে ব্রেন স্ট্রোক।
এছাড়াও লক্ষণ সাদৃশ্য যে কোন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আসতে পারে। রোগীর পূর্ণাঙ্গ কেস টেকিং করে তবেই ঔষধ নির্বাচন করতে হবে।

এখন আমরা স্ট্রোক সম্পর্কিত আরো কিছু কমন প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

প্রশ্নঃ ১) লো প্রেসার এ কি স্ট্রোক হয়? 

উত্তরঃ যদিও স্ট্রোকগুলো প্রায়শই উচ্চ রক্তচাপের সাথে সম্পর্কিত তবে নিম্ন রক্তচাপ যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যেও স্ট্রোক ঘটতে পারে। নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশন মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করতে পারে যার ফলে ইস্কেমিক স্ট্রোক হতে পারে। যাইহোক নিম্ন রক্তচাপের সাথে সম্পর্কিত স্ট্রোকগুলি উচ্চ রক্তচাপের সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক কম দেখা যায়।

প্রশ্নঃ ২) স্ট্রোকের প্রাথমিক ব্যবস্থাপনাঃ স্ট্রোক হলেই সঙ্গে সঙ্গে কি করবেন?

উত্তরঃ স্ট্রোকের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, thrombolytic therapy(জমা রক্ত গলিয়ে ফেলা) এর সুবিধা আছে এমন একটি হাসপাতালে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে পৌঁছে দিতে হবে। স্ট্রোকের রোগীর ক্ষেত্রে Time means brain. কারণ স্ট্রোকের রোগীর প্রতি মিনিটে মস্তিষ্কের 1.9 মিলিয়ন নিউরন নষ্ট হতে থাকে। তাই সময় যতই অতিক্রম হবে মস্তিষ্কের ক্ষতি তত বাড়তে থাকবে। 

বিশিষ্ট নিউরোলজিস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডাঃ সুভাষ কান্তি দে, তিনি একটি ইন্টারন্যাশনাল ডাটা জানিয়েছেন “কেউ যদি স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আসেন তবে ১০০ জনে ৩২ জন রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যেতে পারবেন। আর কেউ যদি সাড়ে চার ঘন্টার ভিতরে হাসপাতালে আসতে পারেন তবে এই সংখ্যাটা ১০০ জনে ১৬ জন রোগি সুস্থ স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যেতে পারবেন। আর স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তিন ঘণ্টার যত আগে রোগী হাসপাতালে আসবে তত এই রিকভারির পার্সেন্টেজটা বাড়তে থাকবে। যদি স্ট্রোকের পর ৩০ মিনিটের মধ্যে কেউ হাসপাতালে আসতে পারে তবে তার রিকভারির চান্স বহুগুনে বেড়ে যাবে। ফুল রিকভারি করার অনেক বেশি চান্স থাকবে”।

প্রশ্নঃ ৩) ঘুমের ভেতর অনেকের স্ট্রোক হয়, তাদের ক্ষেত্রে কি করনীয়?

উত্তরঃ অনেক রোগীর ঘুমের ভেতরে স্ট্রোক হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে তারা যখনই বুঝতে পারবে স্ট্রোকের লক্ষণ তখনই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

স্ট্রোকের সময় কাল জানাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যেহেতু ঘুমের ভেতরে স্ট্রোক হয়েছে তাই স্ট্রোকের সময়টা জানা যায় না। এই সকল ক্ষেত্রে রোগী কখন পর্যন্ত ভালো ছিল সেইটি আন্দাজ করতে হয়। যেহেতু এক্ষেত্রে এক্সাক্ট সময় টা জানা যাচ্ছে না তাই ইমেজিং এর হেল্প নিতে হয়। যেমন সিটি স্ক্যান বা এমআরআই। ঘুমের ভেতর কেউ স্ট্রোক করলে যখনই তা বোঝা যাবে সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে যেখানে স্ট্রোকের চিকিৎসা আছে সেই হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।

আপনি জানেন কি? ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করতে পারেন।
বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করতে আবেদন ফর্ম পুরন করুন।

এই লেখাটি ইংরেজীতে পড়ুনঃ
Signs of a brain stroke? What to do if you have a brain stroke?

আরো পড়ুনঃ
লিভার সিরোসিস এর কারণ, লক্ষণ, চিকিতসা ও হোমিওপ্যাথি

ডাঃ দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
২৫.০২.২০২৪

———————————

Dr. Dipankar Mondal
Dr. Dipankar Mondal
আমি ডা. দীপংকর মন্ডল। রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ। যেকোন নতুন ও পুরাতন রোগের চিকিৎসা করার জন্য যোগাযোগ করুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments