ajkerit

Pleural Iffusion এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

Pleural Iffusion কি?

Parietal এবং Visceral এই দুটি প্লুরার ভেতরে যে Pleural Space বা Pleural Cavity তে অবস্থিত সেখানে যদি কোন Fluid বা তরল, বিশেষ করে জল জমে তাকে Pleural Iffusion বলে। তবে যখন জলের পরিবর্তে পুঁজ জমে তখন তাকে Pleural Empyema বলে।

প্রত্যেক ব্যক্তিরই ফুসফুসের এই ক্যাভিটিতে কিছু পরিমাণ তরল থাকে। এই তরল ফুসফুস কে পিচ্ছিল রাখে ফলে ফুসফুস এর সঞ্চালন এবং শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগে সহায়তা হয়। কিন্তু যখন ফুসফুসের প্রদাহ বা ফুসফুসের সংক্রমণ বা অন্য কোন রোগ দ্বারা ফুসফুসে স্বাভাবিক পরিমাণ এর থেকে অধিক পরিমাণে জল জমে তখন অবশ্যই চিকিৎসা করার প্রয়োজন হয়।

Pleural Empyema কি?

Plural Caviety তে যখন কোন প্রকার ইনফেকশন থেকে পুঁজ জমা হয় তখন তাকে Pleural Empyema বলে। এই Pleural Empyema কিছু ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার পরে ডেভলপ করে থাকে। তবে বুকে কোনো আঘাত, ফুসফুসের কোন প্রকার সংক্রমণ, ফুসফুসের ফোড়া, থোরাসিক সার্জারির পর ইত্যাদি কিছু ক্ষেত্রেও রোগটি হতে দেখা যায়।

Chronic Empyema কি?

Acute Empyema এর যথাযথ চিকিৎসা না হলে রোগটি ক্রমান্বয়ে ক্রণিক বা পুরাতন আকার ধারণ করে। তার ফলে Bronchopleural fistula, Amyloidosis, Chronic Malnutrition ইত্যাদি দেখা দেয়। এইরকম জটিল পরিস্থিতিতে সার্জিক্যাল ড্রেনেজ দ্বারা পুঁজ নিষ্কাশন করার প্রয়োজন হয়। এবং তার সাথে সাথে কনজারভেটিভ চিকিৎসারও প্রয়োজন হয়।

ফুসফুস

ফুসফুসে জল জমার কারণঃ

যে সকল কারণ থেকে সাধারণত ফুসফুসে জল জমে থাকে-
যেমন
১) নিউমোনিয়া রোগ থেকে।
২) ফুসফুসের ফোড়া হলে।
৩) ফুসফুস বা ফুসফুসের আবরণীতে কোন সংক্রমণ বা Infection হলে।
৪) ফুসফুসের গুরুতর প্রদাহ বা Inflammation থেকে।
৫) ফুসফুস সম্বন্ধীয় ক্যান্সার বা Carcinoma থেকে।
৬) যক্ষা রোগ থেকে।
ইত্যাদি পরিস্থিতি থেকে ফুসফুসে জল জমতে পারে।
এছাড়াও Cancer, Pulmonary embolism, Kidney disease, Autoimmune disease ইত্যাদি রোগেও ফুসফুসে জল জমতে পারে।

ফুসফুসে জল জমার লক্ষণঃ

ফুসফুসে জল জমলে যে সকল উপসর্গ দেখা দেয় তা হলো-
১) সাধারণত হালকা ধরনের জ্বর থাকে এবং এই জ্বর কখনো প্রায় একেবারে ছেড়ে যায় না। জ্বরের প্রবলতা কখনো কখনো একটু কমে যায় পরক্ষণেই আবার বৃদ্ধি পায়।
২) ক্ষুধাবোধ কমে যাওয়ার কারনে মুখে অরুচি আসে। ফলে ঠিকমতো খাবার খেতে পারে না। এই কারণে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। শরীর ক্রমাগত শুকিয়ে যেতে থাকে।

৩) দীর্ঘদিন যাবত একটা প্রচন্ড কাশি থাকতে দেখা যায়। সাধারণত ফুসফুসের যে কোনো সংক্রমণেই কাশি হতে দেখা যায়।
৪) কখনো কখনো রোগী বমি করে থাকে।
৫) নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে। কেননা এই সকল প্রকার রোগলক্ষণ সমূহ একত্রিত হয়ে নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করে থাকে।

Pleural Iffusion নির্ণয়ঃ

ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন দ্বারা সব সময় প্লুরাল ইফিউশন রোগটি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায় না। এসব ক্ষেত্রে প্যাথলজিক্যাল ইনভেস্টিগেশন এর আবশ্যক হয়। যে সকল প্যাথলজিক্যাল টেস্ট দ্বারা প্লুরাল ইফিউশন রোগটি নির্ণয় করা যায় তা হল-
ESR (Erythrocyte Sedimentation Rate)- কোন ইনফেকশন থাকলে রক্তে ESR এর মাত্রা বেড়ে যায়।
Chest X-ray- এক্স-রে রিপোর্টে Homogeneous Opacity পাওয়া যাবে।
LDH(Low density lipoprotein) এলডিএল এটির মাত্রা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়।
CT Scan: সিটি স্ক্যান রিপোর্টে ফুসফুসে জল দেখা যাবে।

বুকে জল জমার ব্যবস্থাপনাঃ

বুকে জল জমলে রোগের মূল কারণ এর দিকে নজর রেখে সচেতন জীবনযাপন করতে হবে। লঘু পাক অথচ বলকারী খাবার গ্রহণ করতে হবে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা হল বেড রেস্ট(Bed Rest). কোনোভাবেই পরিশ্রমের কাজ করা যাবে না। এর সাথে সাথে রোগীর যদি কোন নেশা বিশেষ করে তামাকজাত দ্রব্য দ্বারা নেশা করার অভ্যাস থাকে তা অবশ্যই বর্জন করতে হবে। বিশেষত রোগী ধুমপায়ী হলে কোনভাবেই এই মুহূর্তে সে ধূমপান করতে পারবেনা। মনে রাখতে হবে মদ্যপান থেকে ক্ষতি সকল অঙ্গেরই হয় তবে প্রত্যক্ষভাবে মদ্যপানে লিভারের ক্ষতি হয়। জর্দা বা তামাক সেবনের কারণে পাকস্থলী প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই কারণে যারা অতিরিক্ত তামাক বা জর্দা পানের সাথে খায় তাদের Tobacco Dyspepsia দেখা দেয়। আর ধূমপান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুসের। তাই ফুসফুসের যেকোন রোগে সর্বাগ্রে ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

Pleural-effusion

Pleural Iffusion এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সাধারণত লক্ষণ ভিত্তিক হয়ে থাকে। রোগ এবং রোগী উভয়ের লক্ষণের সাথে সাদৃশ্য রেখে প্লুরাল ইফিউশন এর চিকিৎসা করতে হবে। তবে সাধারণত যে সকল ঔষধের বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় তা হল-

এপিস মেলঃ রোগীর ফুসফুসের জল জমা রোগ আরোগ্য করতে এপিস মেলিফিকা ঔষধটি অদ্বিতীয়। তবে ঔষধ এর লক্ষণ থাকতে হবে রোগীতে। রোগীর প্রস্রাব কমে যায়। যেকোন জ্বালা ঠান্ডাতে উপশম। রোগীর গরম বেশী, পিপাসাহীন এসব লক্ষণের উপর নজর রেখে এপিস মেল ঔষধটি নির্বাচন করলে তা রোগীর প্লুরাল ইফিউশন রোগটি আরোগ্য করবে।

অ্যাপোসাইনামঃ এর রোগী শীতকাতর। প্রসাবের তেমন পরিবর্তন নাও হতে পারে। রোগীর পিপাসা অধিক।

আর্সেনিক অ্যাল্বামঃ রোগীর ঘন ঘন অল্প পরিমাণে জল পিপাসা, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকতে পারে, রোগীর শীত খুব বেশি, রোগের কারণে রোগীর মৃত্যুভয় এসব লক্ষণে আর্সেনিক নির্বাচিত হলে রোগী এই রোগ থেকে আরোগ্য হবে।

নেট্রাম সালফঃ রোগীর প্রচন্ড কাশি, তার সাথে শ্বাসকষ্ট। হাইড্রোজেনয়েড ধাতুর রোগীর সঙ্গে এসব লক্ষণ থাকলে নেট্রাম সালফ প্লুরাল ইফিউশন আরোগ্য করবে।

আর্নিকা মন্টেনাঃ রোগীর কোন প্রকার আঘাতের ইতিহাস থেকে এই রোগের উৎপত্তি হলে আর্নিকা মন্টেনা দ্বারা রোগী উপকৃত হবে।

হিপার সালফঃ রোগীর ক্রোধ মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেশি, ঝাল মসলা প্রিয়, স্পর্শকাতর বেদনা এসব থাকলে হিপার সালফ খুব সুন্দর ক্রিয়া করবে।

এ সকল ঔষধ ছাড়াও ধাতুগত লক্ষণ সাদৃশ্যে গভীর মায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন সালফার, মার্কসল, সিফিলিনাম, ফসফরাস, সাইলিশায়া ইত্যাদি ঔষধ লক্ষণ সাদৃশ্য প্রয়োগে এই রোগ খুব সুন্দরভাবে আরোগ্য হয়।

Pleural Iffusion কি মারাত্মক?

ম্যালিগন্যান্ট পরিস্থিতি থেকে ফুসফুসে জল জমলে বা প্লুরাল ইফিউশন ডেভলপ করলে সেটি খুবই ভয়াবহ হতে পারে। যেমন ক্যান্সার বা ম্যালিগনেন্সি থেকে ফুসফুসে জল জমলে সেটি সাধারণত খুব জটিল আকার ধারণ করে। তবে অন্যান্য সাধারণ কারণ থেকে রোগটি হলে এবং যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে এটি ভালো হয়ে যায়।

Malignamt Pleural Iffusion এর চিকিৎসাঃ

সাধারণত ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ড্রেনেজ পদ্ধতিতে পুঁজ বের করে ফেলা হয়। কেমোথেরাপি দ্বারা ক্যান্সার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই ড্রেনেজ করতে সাধারণত যে সকল পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় তা হল-
Thoracentesis, Tube Thoracostomy, Catheter, Surgery ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ
হেঁচকি কেন উঠে? হেঁচকি থামানোর উপায়?

ডাঃ দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।
১৯.০১.২০২৩

——————————

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
ajkerit
ajkerit
ajkerit
ajkerit