অস্থিভঙ্গের লক্ষণ জটিলতা এবং ব্যবস্থাপনা

ফ্রাকচার বা অস্থিভঙ্গের লক্ষণঃ 

অস্থিভঙ্গের ক্ষেত্রে যে সমস্ত উপস্থিত চিহ্ন(Sign) পাওয়া যায় তা হলোঃ

সাধারণ অস্থিভঙ্গের সাথে সাথে সেই স্থান ফুলে ওঠে। আহত স্থানের স্বাভাবিক আকৃতির পরিবর্তন ঘটে। অনেক সময় ভাঙ্গা হাড়ের স্থানে খটখট শব্দ হয়। ভাঙ্গা অঙ্গ আয়তনে পূর্ব থেকে ছোট হয়ে যায়। অর্থাৎ ফিতা দ্বারা পরিমাপ করলে তা অপর অঙ্গ থেকে বা পূর্ব আকৃতির থেকে ছোট পাওয়া যায়।
সাধারণত সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের শরীরের অস্থিসন্ধি গুলি ব্যতীত অন্য কোথাও নড়াচড়া করে না। কিন্তু অস্থি ভেঙে গেলে সেই স্থানে নড়াচড়া করে থাকে।অস্থিভঙ্গের ক্ষেত্রে যে সমস্ত আভ্যন্তরিক লক্ষণ(Symptoms) পাওয়া যায় তা হলঃ
অস্থিভঙ্গের স্থানে অসহ্য জ্বালা, ব্যথা বর্তমান থাকে। অস্থিভঙ্গের গুরুত্ব বিচারে রোগী কিছু শক পেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন চার দিন সামান্য জ্বর থাকতে পারে।

অস্থিভঙ্গের ডায়াগনসিসঃ 

১৮৯৫ সালে উইলিয়াম রন্টজেন আবিষ্কৃত ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এক ধরনের তাড়িত চৌম্বক বিকিরণ যার অন্য নাম এক্স-রে(X-Ray) দ্বারা পরীক্ষা করলে খুব সহজে অস্থিভঙ্গের বর্তমান অবস্থান নির্ণয় করা যায়।

অস্থিভঙ্গের জটিলতাসমূহঃ 

ফ্রাকচার বা
অস্থিভঙ্গের ক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিলতার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

অস্থিভঙ্গের সাধারণ উপসর্গ সমূহঃ
১) হাইপোস্ট্যাটিক নিউমোনিয়া।
২) ফ্যাট এম্বোলিজম ।
৩)শয্যাক্ষত ।
৪) মূত্রগ্রন্থি পাথুরী।
অস্থিভঙ্গের স্থানীয় উপসর্গ সমূহঃ
১) অনেক সময় ভগ্ন অস্থি সম্পূর্ণ জোড়া না লাগতে পারে।
২) বিকৃতভাবে ভগ্ন অস্থি জোড়া লাগতে পারে।
৩) গ্যাংগ্রিন বা পচা ক্ষত অস্থিভঙ্গের স্থানে হতে পারে।
৪) অস্থিভঙ্গের স্থানে রক্তস্রাব হতে পারে।
৫) ভগ্ন অঙ্গের বিকৃতি হতে পারে।

অস্থিভঙ্গের ব্যবস্থাপনাঃ
অস্থিভঙ্গের ক্ষেত্রে যে সমস্ত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়ে থাকে সেগুলো হলোঃ
সাধারণত দুর্ঘটনাবশত বা যে কোন কারণে অস্থিভঙ্গ হলে প্রাথমিক উদ্দেশ্য থাকে রোগীর শরীরে যেন ব্যথা-বেদনা কম হয় ও রোগী যেন মারাত্মক কোন শক না পায়। এবং আরো বেশি ক্ষতি সাধন হওয়া থেকে রোগীকে রক্ষা করা। এই কারণে অস্থিভঙ্গের প্রাথমিক ব্যবস্থাপনা হিসেবে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাগুলি যত দ্রুত সম্ভব গ্রহণ করতে হবে।
১) অস্থিভঙ্গের স্থানে যত দ্রুত সম্ভব কোন কিছু দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে দিতে হবে যাতে রক্তক্ষরণের পরিমাণ কম হয়।
২) আঘাত লাগার সঙ্গে সঙ্গে আহত স্থানে বরফের সেঁক দিতে হবে তাহলে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা পায় ।
৩) রোগীকে বেদনা মুক্ত রাখতে বেদনানাশক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
৪) ভগ্ন স্থান যাতে বেশী নড়াচড়া না করে সেই কারণে ভগ্ন স্থানে অনড়করন বা (Immobilisation) করতে হবে এবং রোগীকে যথাসম্ভব বিশ্রামে রাখতে হবে।
এই উদ্দেশ্যে ভগ্ন স্থান স্প্লিন্ট বা কাষ্ঠ ফলক দ্বারা বেঁধে দিতে হবে। যাতে ভগ্ন স্থান অবলম্বন পেতে পারে।
৫) যথাস্থানে ভগ্ন অস্থিকে বসিয়ে দিতে হবে অর্থাৎ রিডাকশন(Reduction) করতে হবে।
৬)  মারাত্মক জখম এর কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে প্রচুর রক্ত যদি রোগীর শরীর থেকে বের হয়ে যায় তবে রোগীর শরীরে রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা করতে হবে।
………………………………………………………
লেখকঃ
দীপংকর মন্ডল(ডিএইচএমএস, চতুর্থ বর্ষ,বিএইচবি)
২৮/১০/২০২০ বুধবার।
………………………………………………………
এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোন লেখা কপি না করার অনুরোধ রইলো। প্রয়োজনে শেয়ার করুন।
ধন্যবাদ।
………….

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪