OrdinaryITPostAd

হোমিওপ্যাথিক ঔষধের পুনঃপ্রয়োগের যথার্থ সময়

হোমিওপ্যাথিক ঔষধের পুনঃপ্রয়োগের যথার্থ সময়

হোমিওপ্যাথিতে রোগীলিপির শুরু থেকে রোগীকে ঔষধ প্রয়োগ পর্যন্ত সব কিছুই সফল ভাবে সম্পন্ন হলেও, শুধুমাত্র ঔষধের পুনঃপ্রয়োগে ভুল হলে এই সমস্ত আরোগ্য প্রক্রিয়াটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। বিশেষ করে দশমিক ও শততমিক রীতির ক্ষেত্রে এই বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একটি ঔষধ যখন রোগীতে ক্রিয়াশীল থাকে সেই সময় ভিন্ন কোনো শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ, এমনকি ওই একই ঔষধ ভিন্ন শক্তিতে কোন ভাবেই প্রয়োগ করা যাবে না। যেমন যদি কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে সালফার ৩০ শক্তি প্রয়োগ দেখা যায় রোগীর রোগ আরোগ্য পথে চলেছে, তবে ওই ঔষধের ক্রিয়া শেষ হওয়ার পূর্বে কোন ভাবেই দ্রুত আরোগ্যের আশায় পরবর্তী শক্তি বা ঔষধটির অনুপূরক ঔষধ প্রয়োগ করা যাবে না। যতদিন ধরে আরোগ্য ক্রিয়া চলবে ততদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এরূপে যখন ঐ ঔষধ এর ক্রিয়া শেষ হবে অর্থাৎ উক্ত ঔষদের ক্রিয়াকাল শেষে পুনরায় ঐ ঔষধের উচ্চ শক্তি বা একই শক্তি বা অনুপূরক ঔষধ প্রয়োগ করা যেতে পারে।
তাই বলা যায় হোমিওপ্যাথিতে ঔষধ প্রয়োগের চেয়ে ঔষধ বন্ধ রাখার শিক্ষাই অধিক প্রয়োজনীয়।
এই কারণেই ডাক্তার রাধারমন বিশ্বাস পুনঃপুন ঔষধ প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ঔষধ না দেওয়াকেই(No Repetition) চিকিৎসার মূল মন্ত্র করে নিয়েছিলেন। এবং তিনি তার সমস্ত অনুগত শিষ্যদের জীবনভর এই শিক্ষাই প্রদান করেছিলেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন পুনঃ পুনঃ শক্তিকৃত হোমিও ঔষধ প্রয়োগে রোগীর মারাত্মক সর্বনাশ হয়ে থাকে এবং তা ক্ষেত্রবিশেষে এত বেশি গুরুতর হয় যে রোগের মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হয়।
তাই ঔষধের প্রয়োগে আমাদের সদা-সর্বদা সম্পূর্ণভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
হোমিওপ্যাথিতে শক্তিকৃত হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রোগীর শরীরে ক্রিয়াশীল থাকে। একে ঔষধ এর ক্রিয়াকাল বলে।
যেমন নাক্স ভমিকা ঔষধটি ৭ দিন রোগী শরীরে ক্রিয়া করে থাকে। অর্থাৎ এই ঔষধটি প্রয়োগ করলে তা রোগীর শরীরের ৭ দিন যাবত কাজ করে থাকে।
এইরূপে হোমিওপ্যাথিতে এমন ওষুধ আছে যা রোগীতে প্রয়োগের পর মাত্র ছয়ঘণ্টা পর্যন্ত রোগীর শরীরে ক্রিয়া করে থাকে। আবার এমন ঔষধও আছে যার ক্রিয়াকাল ৩ মাসেরও অধিক।
তবে একটি কথা এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে, ঔষধের এই ক্রিয়াকাল সবসময় একই রকম হয় না। এটি নির্ভর করে রোগের ধরন ও রোগীর ধাতুগত বৈশিষ্ট্যের উপর।
নিচে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো-
 ১) রোগের ধরন ও প্রকৃতিঃ বিষম ও মারাত্মক  প্রকৃতির রোগের আকস্মিক আক্রমণ যদি তীব্র হয় অর্থাৎ রোগটি যদি ভীষন আকারে আক্রমণ করে থাকে তবে প্রয়োগকৃত  ঔষধ অল্প সময়েই দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ফলে এসব ক্ষেত্রে ঘনঘন ঔষধ প্রয়োগের আবশ্যকতা হয়।
২) রোগীর ধাতুগত অবস্থাঃ কিছু ক্ষেত্রে রোগীর ধাতুগত অবস্থার বৈষম্য বা রোগী শরীরের নীহিত মায়াজমের ক্রিয়াশীলতায় ঔষধ তার স্বাভাবিক ক্রিয়া শক্তি  হারিয়ে দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন পুনরায় ঔষধের প্রয়োগ আবশ্যক হয়।
 অর্থাৎ সংক্ষেপে বিষয়টি এরুপ যে পালসেটিলার স্বাভাবিক ক্রিয়া কাল ৪০ দিন। অর্থাৎ কোনো বাধা না পেলে পালসেটিলা রোগীর শরীরে একবার প্রয়োগের পর ৪০ দিন পর্যন্ত ক্রিয়া করে থাকে। কিন্তু রোগটি যদি একিউট শ্রেণীর ও মারাত্মক হয় সে ক্ষেত্রে ঘন ঘন ঔষধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়।
আবার সুপ্ত মায়াজমের কারণেও বাধাপ্রাপ্ত হয় ৪০ দিনের পূর্বেই সে তার ক্রিয়াশক্তি হারাতে পারে।
তবে স্বাভাবিকভাবে প্রত্যেকটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধের একটি স্বাভাবিক ক্রিয়াকাল আছে যা প্রত্যেক চিকিৎসককে জেনে রাখতে হবে।
যে সমস্ত পুস্তকে এসব তথ্য পাওয়া যাবে-
1) Dr Gibson miller’s “relationship of remedies”
 
2) Herring’s “condensed materia Medica”
 
3) Hahnemann’s “chronic diseases”
 
4) Boening Hausens  “Work”
ঔষধের ক্রিয়াকাল বিষয়ে ডাঃ জারের একটি উপদেশ হোমিও চিকিৎসকদের সর্বদা স্মরণযোগ্যঃ
তার বক্তব্য অনুযায়ী একিউট বা তরুণ রোগের প্রচণ্ডতা অনুসারে ঔষধের ক্রিয়াকাল ১৫ মিনিট থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এবং ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে ওষুধের ক্রিয়া মোটামুটি ৬ থেকে ৮ দিন পর্যন্ত ধরে নিতে হবে। যদি আবশ্যক হয় তবে এই সময়ের পরে ঔষধ পরিবর্তন করা যায়।
ডাঃ দীপংকর মন্ডল।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪