OrdinaryITPostAd

ব্যক্তি বিষন্নতায় ভুগছে কিনা তা কিভাবে বুঝবো?

ব্যক্তি বিষন্নতায় ভুগছে কিনা তা কিভাবে বুঝবো?

সাধারণত ব্যক্তি দৈনন্দিন জীবনে নানাবিধ অপ্রত্যাশিত দুঃখ-দুর্দশা বা নানাবিধ ঘটন-অঘটনের দ্বারা প্রায়ই পিড়িত হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সাধারণ মাত্রায় থেকে থাকে। কিন্তু যখন এটি মাত্রার সীমা ছাড়িয়ে যায়, ব্যক্তি এর থেকে উত্তরণের কোনো পথ খুঁজে না পায়, তখনই নৈরাশ্য বা বিষণ্নতায় ভুগতে শুরু করে।
এই অবসাদ বা বিষন্নতার পিছনে অনেক সময় হয়তো বা যৌক্তিক কারণ থাকে, আবার অনেক সময় সিজোফ্রেনিয়ার মতো মানসিক রোগ দ্বারা আক্রান্ত হলে, রোগী অনেক অযৌক্তিক ও অবাস্তব বিষয় যা ঘটার সম্ভাবনা নেই, এমন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় ও চরম অবসাদে ভুগতে থাকে। এরূপ পরিস্থিতিতে আমাদের মধ্যে অনেকেই বিষণ্নতায় ভুগতে ভুগতে অবশেষে আত্মহত্যার মতো অপরাধজনক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, যা কোনোভাবেই সমর্যোথনযোগ্য নয়।
যথাসময়ে বিষন্নতার কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করতে পারলে রোগী আবার সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়। অথবা এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। যেকোনো দুঃখজনক অনভিপ্রেত ঘটনা মূলক মানসিক চাপে রোগীর মনস্তরে যে লক্ষণগুলো কাজ করে তা হল, ক্লান্তি, ইচ্ছাহীনতা, নৈরাশ্য, হতাশা, বিষন্নতা, ব্যর্থতার অনুভূতি, অপরাধবোধ, মানসিক অশান্তি ইত্যাদি। অর্থাৎ মানসিক চাপ মুলক এই সমস্ত উপাদান দ্বারা ব্যক্তি ক্রমাগত আক্রান্ত হতে হতে যখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন অনেকেই হয়তো আত্মহত্যার মতো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।
তাই যদি প্রাথমিক অবস্থায় বিষণ্নতা বা ডিপ্রেশন অবস্থায় রোগীকে সুস্থ করা যায়, তবে রোগী সহজেই তার মনস্তরে নির্মলতা ফিরে পাবে। চিকিৎসাকালীন চিকিৎসককে রোগীর মনস্তরের বিশ্লেষণ করে রোগীর মানসিক স্থিতি বুঝতে হয়।
রোগীর ভেতর কি পরিমানে বিষণ্নতা কাজ করছে তা জানতে চিকিৎসক কিছু প্রশ্ন রোগীকে করতে পারেন। প্রশ্নগুলো উত্তর এর বিশ্লেষণ করলেই রোগীর মানসিক অবসাদ বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।
সাধারণত রোগীর বর্তমান মানসিক স্তর উপলব্ধি করতে বর্তমান এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহের মানসিক স্থিতির উপর নজর দিলেই হবে।
রোগীর ভেতর বিষণ্ণতার পরিমাণ বুঝতে রোগীকে এই প্রশ্নগুলো করা যেতে পারেঃ
১) আপনি বিগত দুই সপ্তাহের ভিতরে কি কখনো কান্নাকাটি করেছেন? যদি করে থাকেন কি নিয়ে কেঁদেছেন? কতবার কেদেছেন? কান্নার পরিমাণ খুব বেশি ছিল?
এই ধরনের প্রশ্ন করতে হবে। অবশ্য এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের বেলায় প্রশ্নগুলি ঘুরিয়ে করার প্রয়োজন হতে পারে। কেননা পুরুষরা সাধারণত সামাজিকভাবে কাদতে চায় না বা কাঁদলেও কারো কাছে সহজে প্রকাশ করতে চায় না।
২) ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার আসা কতটা?ভবিষ্যৎ নিয়ে কি কোন রকম নৈরাশ্য আপনার জীবনের সৃষ্টি হয়েছে?
৩) বিগত দুই বা এক সপ্তাহের ভেতর কি আপনি কখনো আপনার নিজের প্রতি বিরক্তি ঘৃণা করেছেন?
৪) বিগত দুই এক সপ্তাহের ভেতর কি কখনো নিজেকে অযোগ্য বা ব্যর্থ বলে মনে হয়েছে? যদি হয়ে থাকে তার ধারনা ঠিক কিরূপ?
এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তরে যদি রোগী হ্যাঁ বলে তাহলে বুঝতে হবে রোগী নিশ্চিতভাবে গভীর বিষন্নতায় ভুগছে। এসব ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে রোগীকে মানসিক কাউন্সেলিং করে তার দুশ্চিন্তার অবসান ঘটাতে পারলে, রোগীর মনস্তর পুনরায় নির্মল ও দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়ে উঠবে।
………………………………………………………
লেখকঃ
দীপংকর মন্ডল(ডিএইচএমএস, চতুর্থ বর্ষ,বিএইচবি)
০৭/১০/২০২০ বুধবার।
………………………………………………………
এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোন লেখা কপি না করার অনুরোধ রইলো। প্রয়োজনে শেয়ার করুন।
ধন্যবাদ।
………….

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪